পতনের ধারায় পুঁজিবাজার

টানা দরপতনের সঙ্গে লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে।
লেনদেন, বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও টাকার পরিমাণ কমছে। সপ্তাহে এক দিন কিছুটা
উন্নতি হলে পরের চার দিন টানা দরপতন হচ্ছে। এমন অবস্থা গত নভেম্বর মাসজুড়েই ছিল
পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে
(ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। আগের কার্যদিবসের তুলনায় গতকাল
ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা কমেছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার
ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর
সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪০ দশমিক
৯২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে চার হাজার ৮৮৬ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ দশমিক ৬১
পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৬ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার
৮৯১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে লেনদেন আগের
কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর
তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের
দর কমেছে। মোট ৩৮৫টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
এর মধ্যে ৩৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩০৭টি ফান্ড ও কোম্পানির
দর কমেছে। দিনশেষে ৪৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে
বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন
হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৬৮টি ফান্ড ও
কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৭৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে
ছয়টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর
কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল তিনটি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’
ক্যাটেগরির ৯৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি ফান্ড ও
কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে
অপরিবর্তিত ছিল ১৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একই
সঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৫টি
ফান্ডের মধ্যে একটি ফান্ডের ইউনিট দুটির দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৮টি ফান্ডের ইউনিট দর
কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৫টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে
গতকাল মোট ১৪ কোটি ৫২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৮০টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৩৭ হাজার ৮২১ বার
হাতবদল হয়েছে। এরই জেরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়ায় ৩৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪০৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এই
লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭
কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিডি থাই ফুডের শেয়ার
লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। ১২ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে
তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার।
এছাড়া
ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑওরিয়ন ইনফিউশন,
সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, লাভেলো আইসক্রিম, খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ডমিনেজ
স্টিল বিল্ডিং, একমি পেস্টিসাইজ এবং ফাইন ফুডস।
পুঁজিবাজার
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ ও তারল্য সংকটের
প্রভাবে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগে সতর্ক অবস্থান নিচ্ছেন। ফলে টানা কয়েক
কার্যদিবস ধরে বাজারে পতনের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে।








