মশা নিধন করতে পারলে মানুষের বকা থেকে বাঁচব: আতিক

মশক নিধন কর্মীদের মনিটরিং করাটা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এই মুহূর্তে মশক কর্মীদের মনিটরিং করাটা বড় চ্যালেঞ্জ। তারা ঠিকমত কাজ করছে কি করছে না এটা মনিটরিং করার জন্য বায়োমেট্রিক ও ট্র্যাকিং পদ্ধতি চালু করা হবে। এটা করতে পারলে মশা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করেন তিনি। তবে নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা দিয়ে নয় যত তাড়াতাড়ি মশা নিধন করতে পারবো ততো তাড়াতাড়ি মানুষের বকাবকি থেকে বাঁচব।

 

বুধবার (১০ মার্চ) সকালে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন ৭টি ওয়ার্ডে একযোগে মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু হয়। সেই কর্মসূচি পরিদর্শনে এসে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র একথা বলেন। এসময় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহা. আমিরুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাসেম, ২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সলিমউল্লাহ (সলু), ৩১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মশা বাড়ছে, মশা আছে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা অ্যাকশন প্ল্যান ঠিক করেছি। ডিএনসিসির প্রতিটি অঞ্চলে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দেখতে চাই এই পদ্ধতিতে কি ফলাফল আসে। তারপর সব ঠিক করা হবে।

 

তিনি বলেন, আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ মশক কর্মীদের মনিটরিং করা। এজন্য আমরা বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছি। আমাদের ১২০০ মশক কর্মীদের মনিটরিং করার জন্য প্রথমবারের মতো বায়োমেট্রিক চালু করতে যাচ্ছি। এতে তারা সময়মতো আসছে কি না? আসার পর কাজ করছে কি না সেটা দেখার জন্য প্রত্যেক মশক কর্মীকে ট্র্যাকারের মাধ্যমে চিহ্নিত করব। এজন্য ট্রাকার পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সবকিছু মনিটরিং করা হবে। এই মনিটরিংটা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।

 

মেয়র বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে সবাইকে নিয়ে চেষ্টা করছি। কেউ ঘরে বসে নেই। আমি সকাল থেকে দুপুর মাঠে থেকে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। ফুটপাতের ড্রেন এখন আরকটা বড় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ফুটপাতের নিচে যে ড্রেনগুলো রয়েছে সেগুলোতে ফগিং করা হচ্ছে তারপর লার্বিসাইডিং করা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে মশাটাকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে চাই মশা, খাল পরিচ্ছন্নতায়।

 

তিনি বলেন, সনাতনি পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে কিভাবে মনিটরিং করা যাবে সেটা ওপর জোর দিচ্ছি। এটা যদি করা যায় তাহলে মশা অনেকাংশ কমবে। আমরা মশাটাকে কমিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছি। মশা যত তাড়াতাড়ি নিধন করতে পারব মানুষের বকাবকি থেকে ততো তাড়াতাড়ি রক্ষা পাবো।

 

কত দিনে নগরবাসী স্বস্তি পাবে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, কত দিন না, চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং এটা অব্যহত রাখব। সকালে লার্বিসাইডিং বিকেলে ফগিং। ফগিং ঠিক আছে, লার্ভিসাইডিং এর ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। মশা যখন উড়ে যায় মশার তো কোন বাউন্ডারি থাকে না। সেজন্য লার্বিসাইডিং ওপর সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যদি লার্ভা অবস্থায় বা মশার ডিম্বা অবস্থায় মেরে ফেলতে পারি সেটার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই। এজন্য সকালে ফগিং করে বিকেলে লার্ভিসাইডিং করা হচ্ছে।

 

বিকেলে বেলায় মশা যখন উড়ে যায় মশার কিন্তু কোন বাউন্ডারি ওয়ালা থাকে না, মশা উড়ে যায়। যখন লার্ভা অবস্থায় থাকে তখন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মশা জন্ম হওয়ার পর ফগিং করা হয়, আর লার্ভিসাইডিং হচ্ছে ডিম অবস্থায়। তাই লার্ভিসাইডিং এর ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

 

এরপর মেয়র আতিকুল ইসলাম টিক্কাপাড়া ও মোহাম্মদিয়া হাউজিং প্রধান সড়ক হয়ে রামচন্দ্রপুর খাল এলাকা পরিদর্শন করেন। প্রতিটি জায়গায় নিজে উপস্থিত থেকে মশককর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে ফগিং ও লার্ভিসাইডিং করান মেয়র।